বিশ্বকাপের তিন তাঁরকা লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার
একজন ফুটবলারের অর্জন অনেক থাকতে পারে, কিন্তু জীবনের নিয়মে তাঁরও বাজে সময়
আসতে পারে। সেটি নানাভাবেই। কখনো একজন খেলোয়াড় চোট পেয়ে দীর্ঘদিনের জন্য
মাঠের বাইরে চলে যেতে পারেন, কখনো খারাপ খেলার কারণে সমালোচিত হতে পারেন।
কারও কারও ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যা বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। বিশ্বখ্যাত
ফুটবলাররা তাঁদের জীবনের বাজে সময়গুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠেন, সেসব থাকছে এই
প্রতিবেদনে।
লিওনেল মেসি
আর্জেন্টাইন ফুটবলের বরপুত্র তাঁর ক্যারিয়ারে সম্ভব-অসম্ভব প্রায় সব সাফল্যই পেয়েছেন। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও পেশাদার খেলায় জিতেছেন অনেক কিছুই। পাঁচবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন ব্যালন ডি’অর জিতে। বার্সেলোনার হয়ে স্প্যানিশ লিগের শিরোপার পাশাপাশি জিতেছেন ইউরোপ-সেরা খেতাব চ্যাম্পিয়নস লিগ। কিন্তু তাঁর জীবনেও খারাপ সময় এসেছে। সমালোচনায় জর্জরিত হয়েছেন, আবার সেটি কাটিয়েও উঠেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে জীবনের প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমেই লাল কার্ড দেখেছিলেন। ২০০৫ সালে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে মাঠে নেমে দুই মিনিটের মাথায় সেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। অভিষিক্ত একজন খেলোয়াড়ের জন্য সেটা খুব বড় ধাক্কা। কিন্তু তিনি ফিরেছেন স্বমহিমায়। ১৩ বছরের মাথায় পরিণত হয়েছেন আর্জেন্টিনার সবচেয়ে প্রভাবশালী ফুটবলার হিসেবে। কীভাবে মেসি তা পেরেছেন—এটা অনেকেরই জিজ্ঞাসা।
২০১৪ বিশ্বকাপের পরের সময়টা মেসির জন্য খুব কষ্টের। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার জার্সিতে। বিশ্বকাপের ফাইনালে ভালো খেলেও দল হেরে গেল অতিরিক্ত সময়ের গোলে। বিশ্বকাপ ট্রফিটাকে পাশ কাটিয়ে বিষণ্ন চেহারায় মেসির পোডিয়ামে ওঠার সেই দৃশ্যটা তো ফুটবল ইতিহাসেই স্থান করে নিয়েছে। এখানেই শেষ হলে ভালো হতো। ২০১৫ আর ২০১৬ সালে টানা দুটি কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টের ফাইনালে হারলেন। শেষেরবার তো এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে জাতীয় দল থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু তারপরও মেসি ফিরেছেন। আর্জেন্টিনাকে তুলেছিলেন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে। মেসি নিজের বাজে সময়কে বারবার অবলীলায় পেছনে ফেলতে পারেন কীভাবে, সেটা তাঁর একটা মন্তব্যেই বোঝা যায়। মেসি একবার বলেছিলেন, ‘আপনি সব বাজে সময়কেই কাটিয়ে উঠতে পারেন। সেটা তখনই পারবেন, যখন আপনি কোনো কিছুকে অসম্ভব ভালোবাসবেন।’ মেসি ফুটবলকে ভালোবাসেন। এই ভালোবাসা দিয়েই তিনি খারাপ সময়কে জয় করেন।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ছেলেবেলায় ছিলেন ‘ক্রাই বেবি’। কথায় কথায় কেঁদে ওঠা। কেঁদে কেঁদে যেকোনো কিছু আদায় করা ছিল তাঁর স্বভাব। কিন্তু সেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই পরবর্তী জীবনে হয়ে উঠেছেন চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ের উদাহরণ। পর্তুগিজ তারকা নিজেকে পরিণত করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারে। খারাপ সময় কম আসেনি তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারে। ২০০৪ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের কথা মনে আছে? পর্তুগাল যে সে ম্যাচে গ্রিসের কাছে হেরে যাবে, সেটা কে ভেবেছিল! ১-০ গোলে হারের পর রোনালদোর কান্না নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু আজকের রোনালদোকে দেখুন। সপ্রতিভ ও আত্মবিশ্বাসী। একের পর এক সাফল্য দিয়ে ভর্তি করছেন নিজের অর্জনের ঝুলি। মেসি যখন পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জিতে ফেলেছেন, তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর ঝুলিতে এই পুরস্কার মাত্র একটি। রোনালদোর মনে বড় দুঃখ ছিল এ নিয়ে। কিন্তু সেটি তিনি পেছনে ফেলেছেন নিজের প্রতিজ্ঞা দিয়েই। এখন এই পুরস্কারে মেসি-রোনালদোয় সমতা। ফুটবলারদের জীবনে ভক্তদের ঘৃণা আর ভালোবাসা যেন মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। রোনালদো মুদ্রার ওদিকটা দেখেছেন অনেকবারই। দর্শকেরা দুয়োধ্বনি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। গোল করে, দলকে সাফল্য এনে দিয়ে দর্শকদের তালি আদায় করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁর একটি মন্তব্য তুলে ধরলেই বোঝা যাবে, দর্শকদের ঘৃণা আর ভালোবাসাকে কীভাবে দেখেন পর্তুগিজ তারকা। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘দর্শকদের ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে। কিন্তু দর্শকেরা যখন আমাকে ঘৃণা করে, দুয়ো দেয়, তখন আমার মধ্যে অদম্য শক্তি দেখা দেয়। সে সময় আমাকে থামানো অসম্ভবই।’
নেইমার
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ফরাসি লিগের খেলায় মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন ব্রাজিলীয় তারকা নেইমার। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। জুনে শুরু হওয়া বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কি না, সে শঙ্কা পেয়ে বসেছিল সবাইকে। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে গেলে ছয়-সাত মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যাওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়। কিন্তু নেইমার ফিরেছেন, বিশ্বকাপেও খেলেছেন। ফেব্রুয়ারি থেকে মে—এই তিন মাস রিওর একটি রিসোর্টে নেইমার কী করেননি! দর্শকেরা কেবল খেলোয়াড়দের সাফল্য দেখতেই মাঠে যান। কিন্তু মাঠে নামার আগে তাঁদের যে প্রস্তুতি থাকে, সেটা অনেকের কাছেই অচিন্তনীয়। বিশ্বকাপে নেইমারের ভালো খেলা না খেলা নিয়ে কত কথা! কিন্তু কেউ কি একবারের জন্য ভেবে দেখেছেন, দেশের হয়ে খেলতে গিয়ে কতটা ত্যাগ স্বীকার তাঁকে করতে হয়েছে! পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যাওয়ার পুনর্বাসনপ্রক্রিয়াটা ছিল কষ্টদায়ক। একেবারে রুটিন মাফিক জীবন, চিকিৎসক নির্দেশিত খাওয়াদাওয়া, জীবনযাপন খুব সহজ কিছু নয়। তার ওপর চোট সেরে ওঠার পর হালকা অনুশীলনেও অনেক সময় ‘চোটভীতি’ ভয়াবহভাবে কাজ করে। নেইমার নিজেও বলেছেন বিশ্বকাপের আগে মাঠে ফেরার আগে এই ভীতি পেয়ে বসেছিল তাঁকে। সেটা এড়িয়েই মাঠে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
বিশ্বকাপেও সমালোচিত হয়েছেন নেইমার। যেটা ছিল অন্য রকম। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যাওয়ায় পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া ছিল শারীরিক কষ্টে সীমাবদ্ধ, কিন্তু বিশ্বকাপের সমালোচনাটা ছিল মানসিক কষ্টের। এত বড় চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন, কিন্তু মানুষ বলছে, নেইমার কেন নিজের আসল ফর্মে ফিরতে পারছেন না! প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করতে লাগলেন তাঁকে। নিজেরও কিছু ‘শিশুসুলভ’ আচরণ বিশ্বব্যাপী লক্ষ্যবস্তু হলো সমালোচনার। ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ারও সিংহভাগ দায় তাঁকেই নিতে হয়েছে। কিন্তু এই বাজে সময়টা থেকে নেইমার যে আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই। কেন সন্দেহ নেই, সেটি বোঝা যাবে তাঁর নিজের একটা মন্তব্য বিশ্লেষণ করেই। তিনি বলেছিলেন, ‘যখন আমি হারি বা ব্যর্থ হই, তখন আমি আমার সবকিছু বদলে ফেলি না। এ সময় আমি নিজের ভুলগুলোকে শোধরাতে পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দিই।’
লিওনেল মেসি
আর্জেন্টাইন ফুটবলের বরপুত্র তাঁর ক্যারিয়ারে সম্ভব-অসম্ভব প্রায় সব সাফল্যই পেয়েছেন। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও পেশাদার খেলায় জিতেছেন অনেক কিছুই। পাঁচবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন ব্যালন ডি’অর জিতে। বার্সেলোনার হয়ে স্প্যানিশ লিগের শিরোপার পাশাপাশি জিতেছেন ইউরোপ-সেরা খেতাব চ্যাম্পিয়নস লিগ। কিন্তু তাঁর জীবনেও খারাপ সময় এসেছে। সমালোচনায় জর্জরিত হয়েছেন, আবার সেটি কাটিয়েও উঠেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে জীবনের প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমেই লাল কার্ড দেখেছিলেন। ২০০৫ সালে হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে মাঠে নেমে দুই মিনিটের মাথায় সেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। অভিষিক্ত একজন খেলোয়াড়ের জন্য সেটা খুব বড় ধাক্কা। কিন্তু তিনি ফিরেছেন স্বমহিমায়। ১৩ বছরের মাথায় পরিণত হয়েছেন আর্জেন্টিনার সবচেয়ে প্রভাবশালী ফুটবলার হিসেবে। কীভাবে মেসি তা পেরেছেন—এটা অনেকেরই জিজ্ঞাসা।
২০১৪ বিশ্বকাপের পরের সময়টা মেসির জন্য খুব কষ্টের। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার জার্সিতে। বিশ্বকাপের ফাইনালে ভালো খেলেও দল হেরে গেল অতিরিক্ত সময়ের গোলে। বিশ্বকাপ ট্রফিটাকে পাশ কাটিয়ে বিষণ্ন চেহারায় মেসির পোডিয়ামে ওঠার সেই দৃশ্যটা তো ফুটবল ইতিহাসেই স্থান করে নিয়েছে। এখানেই শেষ হলে ভালো হতো। ২০১৫ আর ২০১৬ সালে টানা দুটি কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টের ফাইনালে হারলেন। শেষেরবার তো এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে জাতীয় দল থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু তারপরও মেসি ফিরেছেন। আর্জেন্টিনাকে তুলেছিলেন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে। মেসি নিজের বাজে সময়কে বারবার অবলীলায় পেছনে ফেলতে পারেন কীভাবে, সেটা তাঁর একটা মন্তব্যেই বোঝা যায়। মেসি একবার বলেছিলেন, ‘আপনি সব বাজে সময়কেই কাটিয়ে উঠতে পারেন। সেটা তখনই পারবেন, যখন আপনি কোনো কিছুকে অসম্ভব ভালোবাসবেন।’ মেসি ফুটবলকে ভালোবাসেন। এই ভালোবাসা দিয়েই তিনি খারাপ সময়কে জয় করেন।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
ছেলেবেলায় ছিলেন ‘ক্রাই বেবি’। কথায় কথায় কেঁদে ওঠা। কেঁদে কেঁদে যেকোনো কিছু আদায় করা ছিল তাঁর স্বভাব। কিন্তু সেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই পরবর্তী জীবনে হয়ে উঠেছেন চোয়ালবদ্ধ লড়াইয়ের উদাহরণ। পর্তুগিজ তারকা নিজেকে পরিণত করেছেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারে। খারাপ সময় কম আসেনি তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারে। ২০০৪ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের কথা মনে আছে? পর্তুগাল যে সে ম্যাচে গ্রিসের কাছে হেরে যাবে, সেটা কে ভেবেছিল! ১-০ গোলে হারের পর রোনালদোর কান্না নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু আজকের রোনালদোকে দেখুন। সপ্রতিভ ও আত্মবিশ্বাসী। একের পর এক সাফল্য দিয়ে ভর্তি করছেন নিজের অর্জনের ঝুলি। মেসি যখন পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জিতে ফেলেছেন, তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোর ঝুলিতে এই পুরস্কার মাত্র একটি। রোনালদোর মনে বড় দুঃখ ছিল এ নিয়ে। কিন্তু সেটি তিনি পেছনে ফেলেছেন নিজের প্রতিজ্ঞা দিয়েই। এখন এই পুরস্কারে মেসি-রোনালদোয় সমতা। ফুটবলারদের জীবনে ভক্তদের ঘৃণা আর ভালোবাসা যেন মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। রোনালদো মুদ্রার ওদিকটা দেখেছেন অনেকবারই। দর্শকেরা দুয়োধ্বনি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। গোল করে, দলকে সাফল্য এনে দিয়ে দর্শকদের তালি আদায় করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁর একটি মন্তব্য তুলে ধরলেই বোঝা যাবে, দর্শকদের ঘৃণা আর ভালোবাসাকে কীভাবে দেখেন পর্তুগিজ তারকা। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘দর্শকদের ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে। কিন্তু দর্শকেরা যখন আমাকে ঘৃণা করে, দুয়ো দেয়, তখন আমার মধ্যে অদম্য শক্তি দেখা দেয়। সে সময় আমাকে থামানো অসম্ভবই।’
নেইমার
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ফরাসি লিগের খেলায় মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন ব্রাজিলীয় তারকা নেইমার। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। জুনে শুরু হওয়া বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কি না, সে শঙ্কা পেয়ে বসেছিল সবাইকে। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে গেলে ছয়-সাত মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যাওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়। কিন্তু নেইমার ফিরেছেন, বিশ্বকাপেও খেলেছেন। ফেব্রুয়ারি থেকে মে—এই তিন মাস রিওর একটি রিসোর্টে নেইমার কী করেননি! দর্শকেরা কেবল খেলোয়াড়দের সাফল্য দেখতেই মাঠে যান। কিন্তু মাঠে নামার আগে তাঁদের যে প্রস্তুতি থাকে, সেটা অনেকের কাছেই অচিন্তনীয়। বিশ্বকাপে নেইমারের ভালো খেলা না খেলা নিয়ে কত কথা! কিন্তু কেউ কি একবারের জন্য ভেবে দেখেছেন, দেশের হয়ে খেলতে গিয়ে কতটা ত্যাগ স্বীকার তাঁকে করতে হয়েছে! পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যাওয়ার পুনর্বাসনপ্রক্রিয়াটা ছিল কষ্টদায়ক। একেবারে রুটিন মাফিক জীবন, চিকিৎসক নির্দেশিত খাওয়াদাওয়া, জীবনযাপন খুব সহজ কিছু নয়। তার ওপর চোট সেরে ওঠার পর হালকা অনুশীলনেও অনেক সময় ‘চোটভীতি’ ভয়াবহভাবে কাজ করে। নেইমার নিজেও বলেছেন বিশ্বকাপের আগে মাঠে ফেরার আগে এই ভীতি পেয়ে বসেছিল তাঁকে। সেটা এড়িয়েই মাঠে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
বিশ্বকাপেও সমালোচিত হয়েছেন নেইমার। যেটা ছিল অন্য রকম। পায়ের পাতার হাড় ভেঙে যাওয়ায় পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া ছিল শারীরিক কষ্টে সীমাবদ্ধ, কিন্তু বিশ্বকাপের সমালোচনাটা ছিল মানসিক কষ্টের। এত বড় চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন, কিন্তু মানুষ বলছে, নেইমার কেন নিজের আসল ফর্মে ফিরতে পারছেন না! প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করতে লাগলেন তাঁকে। নিজেরও কিছু ‘শিশুসুলভ’ আচরণ বিশ্বব্যাপী লক্ষ্যবস্তু হলো সমালোচনার। ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ারও সিংহভাগ দায় তাঁকেই নিতে হয়েছে। কিন্তু এই বাজে সময়টা থেকে নেইমার যে আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই। কেন সন্দেহ নেই, সেটি বোঝা যাবে তাঁর নিজের একটা মন্তব্য বিশ্লেষণ করেই। তিনি বলেছিলেন, ‘যখন আমি হারি বা ব্যর্থ হই, তখন আমি আমার সবকিছু বদলে ফেলি না। এ সময় আমি নিজের ভুলগুলোকে শোধরাতে পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দিই।’
No comments